বণিক বার্তা তথ্য সহযোগিতায় THE BENGAL LENS অর্থনৈতিক ডেস্ক
২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, যখন চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বৈত দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন সরকারের কিছু মহল এবং গণমাধ্যমে ব্যাপক আশাবাদের সঞ্চার হয়। তরুণ, আত্মবিশ্বাসী, এবং চমৎকার বক্তা—আশিক চৌধুরীকে অনেকেই একটি ‘নতুন বাংলাদেশের’ প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেন, বিশেষ করে সেই প্রজন্ম যাদের চোখে পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি হলো প্রযুক্তিবান্ধব, সাহসী নেতৃত্ব।
তার slick ভিডিও, রঙিন ইনফোগ্রাফিকস এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরামহীন আপডেট তাঁকে দ্রুত জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই জৌলুস কিছুটা ম্লান হতে শুরু করেছে। প্রকৃত বিনিয়োগ প্রবাহ এবং বাস্তব পরিসংখ্যান এখন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এই প্রতিবেদন চেষ্টা করেছে প্রচারণা বনাম বাস্তবতার একটি সৎ তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরতে।
তিনি কি সত্যিই সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা এক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন চিন্তক? নাকি নিখুঁতভাবে নির্মিত এক মিডিয়া-ক্যারিশমা, যিনি কাঠামোগত জড়তা ভেদ করতে হিমশিম খাচ্ছেন?
একটি নতুন যুগের প্রতিশ্রুতি
নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই আশিক চৌধুরী একগুচ্ছ উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ গ্রহণ করেন:
- ৫০টি দেশের ৪১৫ প্রতিনিধি নিয়ে আয়োজিত বিনিয়োগ সম্মেলন;
- দেশের প্রথম FDI হিটম্যাপ চালু;
- ইলন মাস্কের Starlink স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবার জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু;
- NASA-র সঙ্গে শান্তিপূর্ণ মহাকাশ সহযোগিতার MoU স্বাক্ষর;
- বিডা, বেজা, হাইটেক পার্কসহ সব বিনিয়োগ সংস্থা এক ছাতার নিচে আনার উদ্যোগ;
- চট্টগ্রাম বন্দরে Maersk-এর সাথে যৌথ বিনিয়োগ পরিকল্পনা।
এইসব উদ্যোগকে “ঐতিহাসিক” বলে প্রচার করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আশিক চৌধুরীর স্টাইল, বক্তৃতা, এবং কূটনৈতিক সৌজন্য পরিবেশনগুলো ভাইরাল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে Gen Z তরুণদের মধ্যে তিনি হয়ে ওঠেন জনপ্রিয় মুখ।
কিন্তু বাস্তবতা ধীরে ধীরে ভিন্ন গল্প বলছে।
সংখ্যাগুলো মিথ্যে বলে না
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) মোট FDI প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ৮৬১ মিলিয়ন ডলার, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১.১৬৪ বিলিয়ন ডলার—অর্থাৎ ২৬% হ্রাস।
একই সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিও হ্রাস পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট LC নিষ্পত্তির পরিমাণ ২.১৩ বিলিয়ন থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১.৫২ বিলিয়ন ডলার—২৮.৬৮% কম।
অর্থাৎ, যতই ঘোষণা থাকুক, প্রকৃত বিনিয়োগ ও শিল্প স্থাপনে আগ্রহ কমেছে।
প্রচারণা বনাম পারফরম্যান্স
আশিক চৌধুরীর নেতৃত্বে আধুনিক মিডিয়া ব্যবহারে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে:
- তার মিডিয়া টিম প্রতিটি উদ্যোগকে গল্পে রূপ দেয়;
- সামান্য বৈঠকও “কৌশলগত অগ্রগতি” হিসেবে তুলে ধরা হয়;
- কথাবার্তায় বারবার “ডেটা-ড্রিভেন,” “ট্রান্সফর্মেশনাল,” “নেক্সট-জেনারেশন” শব্দ ব্যবহার হয়।
কিন্তু বাস্তব অগ্রগতি প্রশ্নবিদ্ধ:
- হিটম্যাপ এখনো বাস্তব বিনিয়োগে স্পষ্ট প্রভাব ফেলেনি;
- বিনিয়োগ সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি মিলেছে, প্রকৃত তহবিল নয়;
- Starlink এখনো লাইসেন্স ও নীতিগত অনুমোদনের অভাবে ঝুলে আছে।
৩,১০০ কোটি টাকার প্রতিশ্রুত বিনিয়োগের বাস্তবায়ন কোথায়, সে প্রশ্নের উত্তর বিডা তাদের ওয়েবসাইটেও দিচ্ছে না।
Gen Z এবং এক ‘নির্মিত সেলিব্রিটি’
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আশিক চৌধুরী একজন “টেক-স্যাভি,” স্মার্ট নেতা হিসেবে জনপ্রিয়। TED Talk ধাঁচে কথা বলেন, ইংরেজিতে সাবলীল, গ্লোবাল ট্রেন্ড বুঝেন—সব মিলিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন এক ধাঁচের আইকন।
কিন্তু অনেকে বলছেন, এই ‘ইমেজ’ তার বাস্তব সাফল্যের ঘাটতি ঢাকার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। সমালোচকদের উদ্দেশ্যে প্রায়শই বলা হয় তারা ‘পুরনো ধ্যানধারণার’।
রিলস, থ্রেড আর পোস্টের যুগে কর্মপরিকল্পনার চেয়ে ক্যারিশমা প্রাধান্য পেয়েছে।
কাঠামোগত বাধা ও দায়সারা ব্যাখ্যা
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, সমস্যাগুলো কেবল আশিক চৌধুরীর হাতে নেই:
- রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা;
- নীতির ধারাবাহিকতার অভাব;
- প্রশাসনিক জটিলতা ও দুর্নীতি;
- আঞ্চলিক সংকট ও জিওপলিটিক্স।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, “বিনিয়োগ একটি বৃত্তাকার প্রক্রিয়া—সময় দিতে হবে।” যদিও এটা আংশিক সত্য, আশিক চৌধুরী নিজেই বিডা ও বেজা দু’টো বড় দায়িত্ব নেওয়ায় তার দায়ও দ্বিগুণ হয়েছে।
অধ্যায় ৬: স্থবিরতা, দেরি এবং স্বচ্ছতার ঘাটতি
কিছু উদ্বেগজনক দিক:
- বিডার ওয়েবসাইটে জুন ২০২৪ পরবর্তী বিনিয়োগ তথ্য নেই;
- প্রতিশ্রুত বিনিয়োগগুলোর অগ্রগতি অজানা;
- “Ease of Doing Business” উন্নয়নের বাস্তব অগ্রগতি নেই।
ডেটা না থাকলে, প্রচারণা দিয়ে স্বচ্ছতা প্রমাণ করা যায় না।
বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের বাস্তবতা
বিভিন্ন চেম্বার অব কমার্সের মতামত অনুযায়ী:
- আইনগত অনিশ্চয়তা;
- নীতিগত জটিলতা;
- ট্যাক্স রিফান্ডে বিলম্ব;
- ভূমি বরাদ্দ ও স্থানীয় প্রশাসনের অদক্ষতা।
ফলাফল: বহু MOU, খুব কম FDI।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য রাজনৈতিক সরকারের অপেক্ষায় রয়েছেন। এছাড়া বিনিয়োগ আকর্ষণ নির্ভর করে আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে তার ওপর। বাংলাদেশের স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাই বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না, এ পরিস্থিতিতে বিদেশীরা কীভাবে বিনিয়োগ করবেন?’
বিসিআই সভাপতি আরো বলেন, ‘দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার এখন ১৫ শতাংশের বেশি। এত সুদ দিয়ে এখানে বিনিয়োগ করবে কে? উচ্চ সুদ ছাড়াও আমাদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন ব্যয়ও প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা না হয় বাদই দিলাম! এ অবস্থায় বিদেশীরা এখানে কেন বিনিয়োগ করতে আসবেন? বিদেশীরা বাংলাদেশের ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেন না। স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাই অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্র থেকে ঋণ নেন। বিদেশীরা তখনই বিনিয়োগ করেন যখন স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসেন। স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা এখন নানা কারণে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন না। আমরা যদি না করি তাহলে বিদেশীরাও আগ্রহী হবেন না।’
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিডার বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যানের বয়স কম। তিনি গতিশীল, আন্তর্জাতিক কিছু অভিজ্ঞতাও তার রয়েছে। এসব কিছু বিবেচনায় আমরা আশাবাদী হতে চাই। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় সামগ্রিকভাবে তার একার পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব না। এটা সামগ্রিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক প্রচেষ্টা। আর শুধু বিডা বা বেজা না, অন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা থাকতে হবে। বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যানের উদ্যোগগুলো হয়তো প্রশংসনীয়, কিন্তু এগুলো বাস্তবে রূপ দিতে সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকা দরকার, যা মাঠ পর্যায় পর্যন্ত বাস্তবায়ন হতে হবে। এজন্য অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে। একটা বড় বিনিয়োগ যদি আমাদের থাকত তাহলে সরকারের এত উদ্যোগেরও প্রয়োজন হতো না। ওই এক বিনিয়োগকারীর ভালো অভিজ্ঞতা আরো অনেক বিনিয়োগকারীকে টেনে নিয়ে আসত। কিন্তু আমাদের অতীতে এমন রেকর্ড নেই, ফলে অসাধারণ ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টা দরকার।’
বর্তমানে যে উদ্যোগগুলো নেয়া হচ্ছে সেগুলো বাস্তবায়নে মনোযোগ দিতে হবে উল্লেখ করে সেলিম রায়হান বলেন, ‘এখনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা প্রচুর। এখনো অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো নামে বিনিয়োগকারীদের সেবাদাতা, কিন্তু কাজে তাদের সেভাবে দেখা যায় না। কর খাত নিয়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বড় ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এনবিআরের করনীতি অনুমানযোগ্য না, যা বিনিয়োগের জন্য আদৌ সহায়ক নয়। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা নিজ নিজ গন্তব্যে অর্থ পাঠানো নিয়েও জটিলতার মুখোমুখি হন। এসব জটিলতায় পুরনোরাই বিনিয়োগ করছেন, নতুন কোনো বিনিয়োগ আসছে না। লজিস্টিকসসহ বিনিয়োগ অবকাঠামোর সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। বাংলাদেশের যখন এত সমস্যা তখন বিনিয়োগকারীর হাতে অনেক বিকল্প আছে, তারা ভিয়েতনামে যেতে পারেন, কম্বোডিয়ায় যেতে পারেন, এমনকি ইন্দোনেশিয়ায়ও যেতে পারেন। বাংলাদেশে কেন আসবেন? এখানে আসতে হলে সবদিক থেকে বাংলাদেশকে আকর্ষণীয় হতে হবে। আর এসব কিছুর ওপরে আছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা।’
বাংলাদেশের বিদ্যমান বিনিয়োগ বাস্তবতার নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে ‘ম্যাজিক’ দেখিয়ে চলেছেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান, যার সর্বশেষ নিদর্শন দেখা গেছে ৮ মে। ওইদিন চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চর পরিদর্শন শেষে আশিক চৌধুরী বড় বিনিয়োগের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি জানান, ডেনমার্কভিত্তিক শিপিং ও লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠান এপি মোলার মায়ের্স্কের প্রধান কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার এ নির্বাহী চেয়ারম্যানকে মায়ের্স্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিষ্ঠানটি ৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।

ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি জাভেদ আখতার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নতুন নির্বাহী চেয়ারম্যান হয়তো চেষ্টা করছেন, কিন্তু সামষ্টিকভাবে রাষ্ট্র সেই চেষ্টা করছে কিনা সেটা দেখতে হবে। একজন মানুষ চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কিন্তু আমরা দেখছি রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলাজনিত দুর্বলতা কাটেনি। স্থিতিশীলতা নেই। স্বাভাবিকভাবেই বিনিয়োগকারীর আস্থা অর্জনে সমস্যা হওয়ার কথা। সব বিনিয়োগকারী এখন ভাবছেন এ সরকার কতদিন থাকবে, নতুন সরকার কবে আসবে। নতুন বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা এ বিষয়গুলো অবধারিতভাবেই ভাবছেন। সব মিলিয়েই বিনিয়োগের সিদ্ধান্তগুলো শ্লথ হয়ে পড়ছে। তবে আশিক চৌধুরী চেষ্টা করছেন। আবার এটাও ঠিক যে আমরা সেই চেষ্টার প্রতিফলন কাগজ-কলমে দেখছি না। প্রতিফলন পেতে সময় লাগবে। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে।’
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এটা ঠিক যে তিনি (আশিক চৌধুরী) চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আবার এটাও ঠিক যে এত তাড়াতাড়ি ফল পাওয়া যাবে না, সময় লাগবে। স্থানীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থায়ন একটা বড় সমস্যা। এখন সবচেয়ে বড় কাজ হলো বিনিয়োগ আকর্ষণের কাঠামোটা তৈরি করা। এতে সময় লাগবেই। যেমন বিডার বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যান লজিস্টিককে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এটা ইতিবাচক কিন্তু এটা অনেক আগে থেকেই দরকার ছিল। বিনিয়োগের জন্য যে সামগ্রিক সমন্বয় ও সক্ষমতার প্রয়োগ দরকার, সেটা এতদিন হচ্ছিল না, যা মাত্র শুরু হয়েছে। এ বিষয়গুলো যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে পারলে হয়তো বিনিয়োগ আসবে। নতুন নির্বাহী চেয়ারম্যান আসার পর তিন-চার মাস লেগেছে সামগ্রিক পরিস্থিতি বুঝতে। প্রথমে তিনি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছেন। এখন সেগুলো অ্যাড্রেস করা শুরু করেছেন। এগুলো ঠিকমতো অ্যাড্রেস করতে পারলে হয়তো ছয় মাস পর আমরা ইতিবাচক কিছু পাব।’
ইমেজ না বাস্তব সংস্কার?
আশিক চৌধুরীকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়াকে কেউ বলছেন “মেধার স্বীকৃতি”, কেউ বলছেন “রাজনৈতিক কৌশল”।
কিন্তু বিনিয়োগ আসে পদবী দেখে না, বাস্তব পারফরম্যান্স দেখে।
ভাবমূর্তি বনাম বাস্তবতা
চৌধুরী আশিক মাহমুদ এক উদ্যমী, প্রতিশ্রুতিশীল মানুষ। তার দৃষ্টি আছে, ভাষা আছে, কিন্তু হিসাব মিলছে না।
বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতির জন্য জনপ্রিয়তা নয়, পরিমাপযোগ্য সাফল্য জরুরি। নতুন প্রজন্মকে বিশ্বাস করাতে হলে বাস্তব রেজাল্ট দেখাতে হবে। নাহলে, হতাশা শুধু বাড়বে।
এই প্রতিবেদন কাউকে হেয় করার জন্য নয়। বরং, এটি একটি আহ্বান—আমরা যেন কর্মক্ষমতাকে গুরুত্ব দিই ক্যারিশমার চেয়ে বেশি।
পরিশিষ্ট:
এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে বণিক বার্তা-সহ একাধিক প্রকাশিত উৎস থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। সব তথ্য যাচাইযোগ্য এবং প্রকাশ্য উৎস থেকে নেওয়া হয়েছে।
সূত্র
- বণিক বার্তা: https://www.bonikbarta.com/bangladesh/EJVGWTnEuy4XkBQc
- The Daily Star: https://www.thedailystar.net/business/news/fdi-slipped-five-year-low-2024-3877126
- Bangladesh Bank: https://www.bb.org.bd/en/index.php/econdata/bop_imp_statistics
- U.S. Department of State: https://www.state.gov/reports/2024-investment-climate-statements/bangladesh/
- Reuters: https://www.reuters.com/world/asia-pacific/imf-sees-gradual-return-economic-normalcy-bangladesh-2024-09-30/